গতবছর রোজার ঈদের কিছুদিন পর প্রথমআলোর কোড়পত্র ছুটির দিনে একটি নিবন্ধন ছাপা হয়েছিল, আমার আপনার বয়সের একদল ছেলেমেয়ে কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সহোযোগীতা ছাড়াই নিজেদের জমানো সামান্য অর্থ দিয়ে একটি বৃহৎ উদ্যোগ নিয়েছিল। প্রত্যেকেই নিজেদের ঈদ উপলক্ষে পোশাক কেনার জন্য বরাদ্দ টাকা জমিয়ে কিছুসংখ্যক পথশিশুদের একটি অন্যরকম ঈদ আনন্দ দেওয়ার প্রয়াস নিয়ে একত্রিত হয়েছিল। আমার যতটুকু মনে পরে, ওরা বেছেনিয়েছিল কমলাপুর রেলস্টেশনে বেড়ে উঠা পথশিশুদের। কাপড় থেকে শুরু করে সেমাই, পায়েস, পোলাও ... মোটামুটি সবকিছুরই আয়োজন করেছিল তারা। পথশিশুদের সংখ্যা ছিল ৩০ থেকে ৫০ জন আর উদ্যোগতারা ছিল "আমার আপনার" বয়সের হাতেগোনা কয়েকজন ...
এই নিবন্ধটির যেদিন প্রকাশিত হয়েছিল সেদিন সকালে আমার খুব কাছের একজন ফোন করে বলেছিল 'ছুটির দিনটি ' দেখে তাকে যেন আবার ফোন করি। যথারীতি নিবন্ধনটি পড়ার পর তাকে কল করলাম। অপরপ্রান্ত থেকে কোন সাড়াশব্দ পেলাম না,বুঝলাম মেয়েটি নিরবে কাঁদছে। আমি আর কিছু বললাম না তবে মনে মনে ভাবলাম কাঁদুক, এই কান্না বেশীক্ষণ স্থায়ী হবে না। বড়োজোর ২৪ মিনিট আর যেই নিবন্ধটা পড়ে তার মন এখন বিষণ্ণ, সেই বিষয়টিই তার মাথায় থাকবে বড়জোর ২৪ ঘন্টা।
এই ঘটনার একমাস পর কথা প্রসঙ্গে সে আমাকে বলল সে আর তার বন্ধুরা মিলে একটি গ্রুপ করেছে। আমি বললাম গ্রুপের নাম কি "বুক্কু কোং এন্ড গোং" ? সে আমার ফাইজলামির গা না ঘেঁষে বলল, সে আর তার বন্ধুরা মিলে ঠিক করেছে আসছে কোরবাণী ঈদে তারা কুমিল্লা রেলস্টেশনের ১০-১২ জন পথশিশুদের জন্য কিছু করবে। আমার তখন ছুটির দিনের নিবন্ধটির কথা মনে পড়ল, তাই সবিনয়ে নিজ উদ্যোগেই বললাম দেখি কোনভাবে সাহায্য করতে পারি কিনা। সেদিন তাকে অন্যান্য দিনের চাইতে অনেক বেশী আনন্দিত মনে হচ্ছিল। ভাবলাম মেয়েরা কত অল্পতেই না খুশী হয়ে যায়।
সুনীলের 'কেউ কথা রাখেনি ' কবিতাটা সে পড়েছিল কিনা জানি না, তবে এটা জানি যে আমি কিন্তু কথা রাখিনি তার অন্যান্য গ্রুপ মেম্বারদের মত। পরে শুনেছিলাম কুমিল্লার পথশিশুরাও নাকি তার কথা রাখেনি!!! সে সেমাই, খিচুড়ি, কিছু পোশাক আর তার এক বন্ধুকে নিয়ে ঠিকই গিয়েছিল কুমিল্লা রেল স্টেশনে, কিন্তু কোরবানী ঈদ হওয়ায় দেওয়ার মত তিন চার জন ছাড়া আর কাউকেই পায় নাই সে। ও হয়তো সেদিন বুঝতে পারে নাই যে তার আনা খাবার থেকেও ভালো ভালো খাবার তারা মানুষের দরজায় গিয়ে পাবে.... সে সত্যিই বুজতে পারে নাই, কারণ সে হিন্দু ছিল....
অন্যদের কথা জানি না তবে আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম তবে এ র্পযন্ত এসেই থেমে যেতাম, আর ভাবতাম যা করেছি মেলা করেছি "ফকিরনির পোলাদের জন্য আর কত? " তবে আশ্চর্যের কথা হচ্ছে মেয়েটা কিন্তু ওখানেই থেমে থাকেনি। গত মাসে জানতে পারলাম, সে তার গ্রুপ মেম্বারদেরকে (নতুন) নিয়ে গ্রামের একটি স্কুলের ৫ শ্রেণীর সকল ছাত্র -ছাত্রীদের (প্রায় ৫০ এর অধিক) একটি করে খাতা, পেন্সিল, কলম, পেন্সিল বক্স দেয়ার আয়োজন করেছিল। সাথে প্রত্যেক কেই একটি করে কলিজা সিঙ্গারা,সমুচা আর একটি করে মজো দেওয়া হয়েছিল।
রাতে ফোনে যখন সে সেই ছেলেমেয়েদের তখনকার অনূভুতির কথা আমাকে বলছিল তখনো সে কাঁদছিল। তবে এ কান্না আগেরবারের মত নিঃশব্দে নয় বরং স্বশব্দে ... যেটা কিনা আমার শোনা সবথেকে পবিত্রতম কান্না, যার আওয়াজ হয়তোবা কখনোই আমাদের মনের দরজায় কড়া নাড়বে না....।
এই নিবন্ধটির যেদিন প্রকাশিত হয়েছিল সেদিন সকালে আমার খুব কাছের একজন ফোন করে বলেছিল 'ছুটির দিনটি ' দেখে তাকে যেন আবার ফোন করি। যথারীতি নিবন্ধনটি পড়ার পর তাকে কল করলাম। অপরপ্রান্ত থেকে কোন সাড়াশব্দ পেলাম না,বুঝলাম মেয়েটি নিরবে কাঁদছে। আমি আর কিছু বললাম না তবে মনে মনে ভাবলাম কাঁদুক, এই কান্না বেশীক্ষণ স্থায়ী হবে না। বড়োজোর ২৪ মিনিট আর যেই নিবন্ধটা পড়ে তার মন এখন বিষণ্ণ, সেই বিষয়টিই তার মাথায় থাকবে বড়জোর ২৪ ঘন্টা।
এই ঘটনার একমাস পর কথা প্রসঙ্গে সে আমাকে বলল সে আর তার বন্ধুরা মিলে একটি গ্রুপ করেছে। আমি বললাম গ্রুপের নাম কি "বুক্কু কোং এন্ড গোং" ? সে আমার ফাইজলামির গা না ঘেঁষে বলল, সে আর তার বন্ধুরা মিলে ঠিক করেছে আসছে কোরবাণী ঈদে তারা কুমিল্লা রেলস্টেশনের ১০-১২ জন পথশিশুদের জন্য কিছু করবে। আমার তখন ছুটির দিনের নিবন্ধটির কথা মনে পড়ল, তাই সবিনয়ে নিজ উদ্যোগেই বললাম দেখি কোনভাবে সাহায্য করতে পারি কিনা। সেদিন তাকে অন্যান্য দিনের চাইতে অনেক বেশী আনন্দিত মনে হচ্ছিল। ভাবলাম মেয়েরা কত অল্পতেই না খুশী হয়ে যায়।
সুনীলের 'কেউ কথা রাখেনি ' কবিতাটা সে পড়েছিল কিনা জানি না, তবে এটা জানি যে আমি কিন্তু কথা রাখিনি তার অন্যান্য গ্রুপ মেম্বারদের মত। পরে শুনেছিলাম কুমিল্লার পথশিশুরাও নাকি তার কথা রাখেনি!!! সে সেমাই, খিচুড়ি, কিছু পোশাক আর তার এক বন্ধুকে নিয়ে ঠিকই গিয়েছিল কুমিল্লা রেল স্টেশনে, কিন্তু কোরবানী ঈদ হওয়ায় দেওয়ার মত তিন চার জন ছাড়া আর কাউকেই পায় নাই সে। ও হয়তো সেদিন বুঝতে পারে নাই যে তার আনা খাবার থেকেও ভালো ভালো খাবার তারা মানুষের দরজায় গিয়ে পাবে.... সে সত্যিই বুজতে পারে নাই, কারণ সে হিন্দু ছিল....
অন্যদের কথা জানি না তবে আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম তবে এ র্পযন্ত এসেই থেমে যেতাম, আর ভাবতাম যা করেছি মেলা করেছি "ফকিরনির পোলাদের জন্য আর কত? " তবে আশ্চর্যের কথা হচ্ছে মেয়েটা কিন্তু ওখানেই থেমে থাকেনি। গত মাসে জানতে পারলাম, সে তার গ্রুপ মেম্বারদেরকে (নতুন) নিয়ে গ্রামের একটি স্কুলের ৫ শ্রেণীর সকল ছাত্র -ছাত্রীদের (প্রায় ৫০ এর অধিক) একটি করে খাতা, পেন্সিল, কলম, পেন্সিল বক্স দেয়ার আয়োজন করেছিল। সাথে প্রত্যেক কেই একটি করে কলিজা সিঙ্গারা,সমুচা আর একটি করে মজো দেওয়া হয়েছিল।
রাতে ফোনে যখন সে সেই ছেলেমেয়েদের তখনকার অনূভুতির কথা আমাকে বলছিল তখনো সে কাঁদছিল। তবে এ কান্না আগেরবারের মত নিঃশব্দে নয় বরং স্বশব্দে ... যেটা কিনা আমার শোনা সবথেকে পবিত্রতম কান্না, যার আওয়াজ হয়তোবা কখনোই আমাদের মনের দরজায় কড়া নাড়বে না....।